সেটা জানাতে গেলে অনেক সময় সম্পর্কে ফাটলও ধরতে পারে অথবা মজবুত হতে পারে।

বিশেষজ্ঞরা বলেন, নিজের সম্পর্কে অন্যের মতামত শোনা হলো চ্যাম্পিয়নদের সকালের নাশতা। অন্যের আচরণ ও কাজ নিয়ে আপনার নিজস্ব মতামত থাকতেই পারে। সেটা জানাতে গেলে অনেক সময় সম্পর্কে ফাটলও ধরতে পারে অথবা মজবুত হতে পারে।
নিজের সম্পর্কে অন্যের মতামত শোনাটা অনেক কঠিন এবং তা মেনেও নেওয়া যায়
না। কিন্তু এতে নিজেকে আরো উন্নত করা যায়, অন্যের বিষয়ে অভিযোগ করা থেকে
বিরত থাকা যায় এবং নিজের মধ্যে অপরাধী অনুভূতি দূর করা যায়।
তাই অন্যের বিষয়ে মতামত দেওয়ার ক্ষেত্রে পরিবর্তন করুন যোগাযোগের
প্রক্রিয়া। এতে আপনার সম্পর্ক উন্নয়নে সুযোগ করে দেবে। চলুন জেনে নিই
সম্পর্ক ভালো রেখে কিভাবে অন্যের কাছে তার সম্পর্কে মতামত জানানো যায়।

১. অনুমতি নিন :
কারো প্রতি আপনার উপদেশ, মন্তব্য বা মতামত থাকলে অবশ্যই তা জানানোর আগে
অনুমতি নিন। এক্ষেত্রে আপনি বলতে পারেন, আপনি যদি চান আমি এ বিষয়ে ভিন্ন মত
দিতে পারি। অথবা জিজ্ঞেস করতে পারেন, আমি কি আমার দৃষ্টিভঙ্গি বলবো? তবে এ
ধাপ সবসময় প্রয়োজন না ও হতে পারে। অপর পক্ষের সঙ্গে আপনার সম্পর্ক এ ধাপের
প্রয়োজনীয়তা নির্ধারণ করবে। আপনার সঙ্গে তার আনুষ্ঠানিক সম্পর্ক হলে
অবশ্যই অনুমতি নিয়ে বলা শুরু করবেন।
২. ইতিবাচক থাকবেন এবং ‘কিন্তু’ শব্দ বাক্যে থাকবে :
চেষ্টা করবেন যে মন্তব্য আপনি তার সম্পর্কে করছেন তা যেন এক তরফা দোষ
দেওয়া না হয়। তার সঙ্গে কথা বলার সময় অবশ্যই ইতিবাচক শব্দ উচ্চারণ করবেন
‘কিন্তু’ শব্দের সঙ্গে। যেমন আপনার বসকে কখনই বলবেন না, আপনার সঙ্গে কাজ
করতে আমার খুবই ভালো লাগে কিন্তু মনে হয় আমার কাজকে সবসময় মূল্যায়ন করা হয়
না। বরং বলুন, আপনার সঙ্গে কাজ করতে আমার ভালো লাগে কিন্তু মাঝে মাঝে মনে
হয় আমার কাজকে মূল্যায়ন করা হচ্ছে না। আমার কাছে মনে হয় আমি নিজের আইডিয়া
সুন্দরভাবে প্রকাশ করতে পারছি না।
৩. মূল্যায়নের সুযোগ দিন :
নিজেকে আগে প্রশ্ন করুন যার সম্পর্কে আপনি মতামত দিচ্ছেন তা তার সত্যিই c
কোনো উপকারে আসবে কিনা। আপনি কি সত্যিই চান অপর পক্ষ তার পন্থা পরিবর্তন
করুক। তার সঙ্গে কথা বলার আগে নিজের বক্তব্য আগে ঠিক করে নিন এবং তাকে
বোঝান এ পরিবর্তন কিভাবে তার উপকারে আসবে। এটাতে সমস্যার সমাধান হবে নাকি
কাজের পরিবেশ উন্নত হবে তা তাকে বোঝান।

৪. আপনার মতের দায়িত্ব নিজে নিন :
আপনার মন্তব্য ‘আমি’ দিয়ে শুরু করুন, ‘আপনি’ বা ‘তুমি’ দিয়ে নয়। অপর
পক্ষকে বলবেন, আমি দেখেছি বা আমার সমস্যা হয়েছে। কখনই বলবেন না, আপনি এটা
কখনই করেন না বা আপনি সবসময় এটাই করেন। কখনই না বা সবসময় এই শব্দগুলো শুনলে
মনে হয় সরাসরি দোষারোপ করা হচ্ছে।
৫. পরিকল্পনা করুন ও আওড়ান :
আপনার বন্ধু বা সহকর্মীকে কি বলবেন তা আগে ঠিক করে রাখুন এবং মনে মনে তা
আওড়ান। যদি আপনি কিছু সময় নেন এ বিষয়ে চিন্তা করার জন্য তাহলে এর ফলাফল
আপনার অনুকূলে আসবে।
৬. মুখোমুখি বলুন :
নতুন এক গবেষণায় দেখা গেছে একটা ইমেইলে কথা বলার থেকে মুখোমুখি কথা বলা
সবচেয়ে ভালো। এতে ইতিবাচক ও নেতিবাচক কথা পরস্পরের সঙ্গে সামনাসামনি আদান
প্রদান হয়ে যাবে। চেষ্টা করবেন গলার স্বর নিচু ও স্বাভাবিক রাখতে। যদি
সামনাসামনি দেখা না করতে পারেন তাহলে অন্তত ফোনে অথবা স্কাইপে কথা বলুন।
৭. মন খুলে কথা বলুন :
অপর পক্ষ থেকে কিছু শোনার জন্য প্রস্তুত থাকুন। স্বেচ্ছায় তার
দৃষ্টিভঙ্গী সম্পর্কে জানুন। মনে করবেন এই পরিস্থিতি হলো উভয় পক্ষের জন্য
শেখার একটা সুযোগ। আপনি যদি অপর পক্ষকে সম্মান প্রদর্শন করেন এবং নির্ভেজাল
থাকেন তাহলে সে নিজেকে অপমানিত অনুভব করবে না।
মন্তব্য